বুধবার এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত জিইডি কোর্স ”Comparative Legal Systems” এর ক্লাস এসেসমেন্টের অংশ হিসেবে এ প্রতিযোগিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনার রুমে ❝শরীয়াহ আইন বাস্তবায়নে রাস্ট্রের ভূমিকাই মূখ্য❞ শিরোনামে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সরকারি দল ও বিরোধী দল পক্ষে – বিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. এনামুল হক আজাদ এর সভাপতিত্বে ছায়া সংসদ এর মাননীয় স্পিকার ও কোর্স পরিচালক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের লেকচারার মো. রাশেদুল আলম এর পরিচালনায় উক্ত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত ফাউন্ডার ও ফাউন্ডিং ভাইসচ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আবুল হাসান মু. সাদেক, গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য ইমেরিটাস প্রফেসর ড. শাহজাহান খাঁন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. নূরুল ইসলাম।
উক্ত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সম্মানিত বিচারক হিসেবে বিচারকার্য পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন অনুষদের সম্মানিত ডিন প্রফেসর ড. নূরুল ইসলাম, কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর এএইচএম সালেক, গভমেন্ট এন্ড পলিটিক্স বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এসোসিয়েট প্রফেসর জনাব মো. জাকির হোসেন, বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মুকতাশা চৌধুরী দিনা, এডমিশন ডিরেক্টর মু. মিজানুর রহমান ভূঁইয়া। বিচারক প্যানেলে ছিলেন ইকোনমিকস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রোক্টর রবিউল করিম মৃদুল, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক মো. সোলাইমান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহজাহান খাঁন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় একটি উন্মুক্ত জ্ঞান অন্বেষার স্থান। পাঠ্যপুস্তকের বাহিরেও এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিসের মাধ্যমে শিক্ষা অর্জন করে জীবন সাজানো প্রয়োজন। ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতা উন্মুক্ত জ্ঞান অন্বেষার অন্যতম মাধ্যম। তিনি আরও বলেন, ইসলাম মানবিক ধর্ম। মানুষের কল্যাণে এর আগমন। শরীয়া হলো ইসলামী আইন ও বিধিবিধান, যা রাস্ট্র কর্তৃক বাস্তবায়িত। ব্যক্তি রাস্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হয়ে এ বিধিবিধান পালনের মাধ্যমে সামগ্রিক কল্যাণ লাভ করে। রাষ্ট্রীয়ভাবে আইন বাস্তবায়ন এর পূর্ণতায় পৌঁছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. নূরুল ইসলাম বলেন, আইন কখনো ব্যক্তি বাস্তবায়ন করতে পারে না। এটি রাস্ট্রের কাজ। ব্যক্তিগতভাবে আইন বাস্তবায়ন করতে গেলে অপরাধ প্রবণতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়, তাই শরীয়ার ক্ষেত্রেও কুরআন, হাদিস অনুসারে যথাযথভাবে রাষ্ট্রীয় আইন অনুসরণ করতে হবে।
স্পিকারের বক্তব্যে মো. রাশেদুল আলম বলেন, শরীয়া হলো ইসলামী আইন, যা রাস্ট্র ও প্রশাসন ব্যতীত ব্যক্তিগতভাবে সম্পূর্ণরূপে পালন করা যায় না। রাস্ট্র আইন বাস্তবায়ন করে, ব্যক্তি তার সহযোগী হয়। রাস্ট্রের নির্দেশনা ও উদ্যোগ না থাকলে শরীয়ায় বাধ্যবাধকতা থাকার পরও ব্যক্তি তা পালন করতে পারে না। যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো পার্শ্ববর্তী রাস্ট্র ভারত। শরীয়ায় কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার পরও ভারতের মুসলমানগণ গরু কুরবানি করতে পারে না রাস্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে, রোযা ফরজ হওয়ার পরও চিনের উরুগুয়ের মুসলমানগণ স্বতস্ফূর্তভাবে রোযা পালন করতে পারে না রাস্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে, পর্দা ফরজ হওয়ার পরও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে মুসলিম মা বোনদেরকে পর্দা করার জন্য জোর দিয়ে বলা যায় না রাস্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে। সুতরাং শরীয়া আইন বাস্তবায়নে রাস্ট্রের ভূমিকাই মূখ্য।
ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিবিএ স্টুডেন্ট তামিম রানার নেতৃত্বে সরকারি দল, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শিফা ইসলামের নেতৃত্বে বিরোধী দলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন, সোসাল ওয়ার্ক, ইংরেজি, সোশিয়লজি অ্যান্ড এনথ্রপলজি বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এতে বিজয়ী হন বিরোধী দল, বেস্ট ডিবাটার নির্বাচিত হন বিরোধী দলীয় প্রধান শিফা ইসলাম।