Monday, May 5, 2025
Google search engine
Homeরাজধানীলাকসামে মাদ্রাসার ৫ তলার জানালা দিয়ে পড়ে ছাত্রীর মৃত্যু

লাকসামে মাদ্রাসার ৫ তলার জানালা দিয়ে পড়ে ছাত্রীর মৃত্যু

লাকসামে ইকরা মহিলা মাদ্রাসার মাদ্রাসা ৫ তলার জানালার ফাঁক দিয়ে লাফিয়ে পড়ে মোসাম্মৎ সামিরা (১৩) নামে এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টা চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।একইদিন রাত আড়াইটায় সে ৫ তলা থেকে লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হয়। নিহত মোসাম্মৎ সামিরা নাঙ্গলকোট পৌরসভার নাওগোদা এলাকার প্রবাসী নিজাম উদ্দিনের মেয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৮ এপ্রিল রাত আড়াইটার দিকে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়কের লাকসাম বাইপাস নোয়াখালী রেলগেট এলাকার ইকরা মহিলা মাদ্রাসায় ভর্তি করে সামিয়ার মা শারমিন আক্তার। পূর্বের মাদ্রাসায় পড়াশোনায় অমনোযোগী হওয়ায় তাকে ইকরা মাদ্রাসার আবাসিকে ভর্তি করা হয় গত রমজানের মাঝামাঝি। এক সপ্তাহ আগে নতুন বছরের ক্লাস শুরু হয়। কিন্তু ঐ ছাত্রী আবাসিকে থাকতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে।

বৃহস্পতিবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঐ ছাত্রী তার মাকে ফোন করে। রাতে সবার অজান্তে জানালার ফাঁক দিয়ে সে নিচে ঝাঁপ দেয়। এতে তার হাত ও পাঁজরের হাঁড় ভেঙে যায়। স্থানীয় লোকজন ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসালয়ে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার ঢাকায় রেফার করে। ভোর ৫টার দিকে পরিবারের সদস্যরা তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা করেন। পরে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা সাড়ে ১১টায় তার মৃত্যু হয়। ধানমন্ডি থানা পুলিশ লাকসাম থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামে।

সামিরার মামা নাছির উদ্দিন ও একই বাড়ির চাচা সৈকত বলেন, আমাদের কোন অভিযোগ ছিল না। পোস্টমর্টেম ছাড়া লাশ দাফন করার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেছি। পুলিশ পোস্টমর্টেম ছাড়া লাশ দাফন করতে দেয়নি। তাই আমরা থানায় অভিযোগ করেছি।

মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা জামাল উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টায় মাদ্রাসার পাশের লোকজন মেয়েটিকে রাস্তায় পড়ে কাঁদতে দেখে আমাকে ফোন দেয়। খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ তাকে পার্শ্ববর্তী ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে ডাক্তার না থাকায় আমেনা মেডিকেলে নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত ডাক্তার ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বেলা সাড়ে ১১টায় তার মৃত্যু হয়।

মাদ্রাসার মুহতামিম জানান, মেয়েটিকে রমজানের মাঝামাঝি এখানে ৭ম শ্রেণিতে ভর্তি করিয়েছে। মাত্র এক সপ্তাহ সে এখানে অবস্থান করছে। তাদের গ্রামের আনোয়ারুল উলুম মাদ্রাসা সে ঠিকমতো পড়াশোনায় মনোযোগী ছিল না। তাই অভিভাবক আমাদের আবাসিকে রেখেছে। ঘটনার আগেরদিন সামিরা বাড়ি যেতে চেয়েছিল। তার মা একদিন পর তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে। এরমধ্যে মেয়েটি জানালার ফাঁক দিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে।

তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে নেয়ার পর মেয়েটি বলেছিল- তাকে বাড়িতে না নিয়ে যাওয়ায় সে জানালার ফাঁক দিয়ে ঝাপিয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে কুমিল্লার সহকারী পুলিশ সুপার (লাকসাম সার্কেল) সৌমেন মজুমদার বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। জানালার মধ্যখানে একটি রড ফাঁকা রয়েছে। ঐ ফাঁক দিয়ে সে ঝাপিয়ে পড়তে পারে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে শুক্রবার রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত নিহতের পরিবার বা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কেউ বিষয়টি পুলিশকে জানায়নি।

জানা যায়, শুক্রবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে লাকসাম থানায় লিখিতভাবে একটি অপমৃত্যু সংবাদ দেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments