Friday, December 5, 2025
Google search engine
Homeজাতীয়লাকসামে শিশুদানব মশার তান্ডবে মানুষ অতিষ্ট

লাকসামে শিশুদানব মশার তান্ডবে মানুষ অতিষ্ট

মশিউর রহমান সেলিম, লাকসাম (কুমিল্লা):
কুমিল্লার লাকসাম, বরুড়া, লালমাই, নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জের কয়েকলাখ মানুষ অতিষ্ট শিশু দানব মশার বেপরোয়া তান্ডবে। শহর থেকে গ্রামঞ্চলের অলিগলি,বাসা, অফিস সব জায়গাতেই বেড়েছে মশার যন্ত্রণা। মশার অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে তাদের দৈনন্দিন খরচের তালিকায় যোগ হয়েছে কয়েলসহ বিভিন্ন মশার ঔষধ কেনার খরচ। দেশব্যাপী অদৃশ্য ভাইরাস করোনা, চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু আতংকের জের ধরে অবশেষে এখনও টনক নড়েনি স্থানীয় প্রশাসনের।

গত ২/৩ বছর যাবত লাকসাম, বরুড়া ও নাঙ্গলকোট পৌরকর্তৃপক্ষের তত্বাবধানে চলছিলো মশা নিধনে পাড়া মহল্লায় ঔষধ ছিটানোর কাজ। এখন তা আজ থমকে দাঁড়িয়েছে। তারপরও ঐসব অদৃশ্য ভাইরাস প্রতিরোধে লাকসাম উপজেলা ও পৌরপ্রশাসন যৌথ ভাবে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচী পালন করে যাচ্ছে। এমন কি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক কাউছার হামিদ নাগরিক সুবিদা বাড়াতে এবং অদৃশ্য ভাইরাস এবং জলাবদ্ধতা নিরাসনে ড্রেন, কালভাট খাল-নদী সংস্কার ও পরিচন্নতা নিয়ে রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছে। দেখা যাক অদৃশ্য ভাইরাস প্রতিরোধ ও জলাবদ্ধতা নিরাসনে তিনি কতটুকু সফলতা অর্জন করে তা অবশ্য সময় বলে দিবে।


পৌরসভাগুলোর একাধিক সূত্রে জানা যায়, মশক নিধনে জেলা দক্ষিনাঞ্চলের পৌরসভাগুলোর কর্তৃপক্ষ গত বছর পৌরশহরের পাড়া, মহল্লা এবং নালাগুলোতে মশার ওষুধ ছিটালেও চলতি বছর ওই প্রকল্পটি আবার শুরু হয়। শিশু দানব মশার অত্যাচারে অনেকটাই বিপাকে পড়তে হচ্ছে সকল শ্রেনী পেশার মানুষদের। শিশুধানব মশার কামড়ে অতিষ্ঠ জেলা দক্ষিনাঞ্চলের ৫টি উপজেলাবাসী। নানাহ শিকারে পড়ে উপজেলা ৫টির নিম্নাঞ্চলসহ পৌরশহরগুলোর বিভিন্ন এলাকার অভিজাত ও বানিজ্যিক এলাকায় মশার উপদ্রব মারাত্মক বেড়েছে। এলাকার প্রত্যেক বাড়ীতে ভাইরাস জ্বরের প্রার্দুভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় নানাহ ভাইরাস রোগের কথাবার্তা উঠেছে মানুষের মাঝে। বিশেষ করে গত ১৫ দিনে জেলার সর্বত্র ডায়রিয়া সহ অদৃশ্য ভাইরাস রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।


অপর দিকে জেলা দক্ষিনাঞ্চলের পৌরবাসীরা বলছেন, শীত কমার সাথে-সাথে অন্য সময়ের ছেয়ে শিশুধানব মশার উপদ্রব মারাত্মক বেড়েছে। দিনের বেলায়ও মশার হাত থেকে কারো যেন রেহাই নেই। অন্যদিকে সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দরজা-জানালা বন্ধ করে ঘর বন্ধি হিসাবে থাকতে হচ্ছে মানুষদের। অথচ জেলাদক্ষিনাঞ্চলের ৫টি উপজেলা ও ৩টি পৌর কতৃপক্ষ বসন্তের আগমনী বার্তায় মশক নিধনে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনায় দায়িত্ব অতিমুখ্য হলেও এখনো এর কার্যকর কোন পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছেনা ফলে এ অঞ্চলে দিনে রাতে শিশুধানব মশার উপদ্রব শুধু বাড়ছেই।


জেলা দক্ষিনাঞ্চলের স্থানীয় একাদিক সুত্র জানায়, বিগত দিনে পৌরসভার মশক নিধন কর্মীরা শুধুমাত্র রাস্তার পাশেই ওষুধ ছিটিয়ে কার্যক্রম শেষ করেছে অথচ ঝোপ-ঝাড়, অলিগলি কিংবা বাড়ির পাশে নিচু জায়গায় সামান্যতম ওষুধ ছিটাতেও তারা ছিল নারাজ। সে ওষুধে কোনো কাজ হয়েছে কিনা মশার ভয়াবহ তৎপরতা দেখে বোঝা যায়নি। গত কয়দিন ধরে মশার উৎপাত শুধু বাড়ছেই।‘যন্ত্রনায় আছিরে ভাই’! তবুও শুধু পৌর কর্তৃপক্ষের দোষ দিতে নারাজ ৩টি পৌরশহরের বাসিন্দারা। পৌরশহরের আনাছে-কানাচে, ডাকাতিয়া নদীসহ সংযোগ খালের পাড় অপরিচ্ছন্ন অসংখ্য ডোবা-নালার মশা নিধন একটি কঠিন কাজ। বিশেষ করে গত ২/৩ বছর পূর্বে প্রত্যেক পৌরশহরে ৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭টি ফিগার মেশিনে ও ৮টি ম্যানুয়েল মেশিনসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করেছে ওইসব পৌর কর্তৃপক্ষ।

ওই সময় ৫ জন সুপার ভাইজারের তত্ত¡াবধানে ১২জন প্রশিক্ষিত কর্মীর ৬টি টিম করে পৌরশহরগুলোতে মশক নিধন কার্যক্রমের প্রকল্প হাতে নেয়া এবং ‘লার্ভিসাইডিং’ (লার্ভা নিধন) ও ‘ফগিং’ (উড়ন্ত মশা নিধন) কার্যক্রম চালানো হয়েছিলো। কিন্তু চলমান ২/৩ বছরে ১/২টিম দিয়ে নামে মাত্র মশক নিধন অভিযান চালু রাখলেও পুরো প্রকল্পটি যেন লাল ফিতায় বন্দী। তারপরও এ প্রকল্পটি আবার পূনার্ঙ্গ ভাবে চালু করার প্রস্তুতি নিয়েছে ৩টি পৌর কর্তৃপক্ষ। মশা মারতে দু’ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয়। লার্ভা নিধনে ব্যবহার করা হয় ‘লার্ভিসাইডিং’ আর উড়ন্ত মশা নিধনে ‘অ্যাডাল্টিসাইড’ ওষুধ ব্যবহার করার কথা থাকলেও তা অনেকটাই অনুপস্থিত বলে নানাহ কথা-বার্তা উঠেছে এলাকার জনমনে। মশা নিধনে বাজারে নানা রকম মশার কয়েল পাওয়া গেলেও অনেক ব্রান্ডেই ভেজাল। কয়েল জালানোর পর জলন্ত কয়েলের উপর মশাকে নৃত্য করতে দেখা যায়।


এ ব্যাপারে জেলা দক্ষিনাঞ্চলের উপজেলা ও পৌরকর্তৃপক্ষের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব হয়নি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments