বিশেষ প্রতিনিধি, মুজিবনগর: মেহেরপুরের মুজিবনগর মহিলা আদর্শ কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক নুরুল ইসলাম ওরফে ‘লালন মাস্টার’কে কলেজ কর্তৃপক্ষ কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ—এক ছাত্রীকে প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং অনলাইন জুয়া চক্রে সক্রিয় ভূমিকা রাখা। এসব ঘটনায় তাকে স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হবে কিনা, তা জানতে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, নুরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন জুয়ার এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন বলে স্থানীয়ভাবে অভিযোগ রয়েছে। তরুণ সমাজ ধ্বংসের পেছনে তার সংশ্লিষ্টতা নিয়ে নানা মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। একাধিক জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি কলেজ কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। তার কর্মকাণ্ডের জন্য প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ও মর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।
তবে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে, যখন গত ২০ জুলাই কলেজের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছাত্রীকে কথিত প্রেমের ফাঁদে ফেলে ‘ভাগিয়ে নেওয়ার’ অভিযোগ ওঠে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা মুজিবনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ইতোমধ্যে অভিযোগটি নিয়মিত মামলায় রূপান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান। পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
শোকজ নোটিশে উল্লেখ করা হয়, এমন দায়িত্বশীল পদে থেকে একজন শিক্ষকের এ ধরনের আচরণ অপ্রত্যাশিত এবং প্রতিষ্ঠানের নীতিমালার পরিপন্থী। তার কর্মকাণ্ড কলেজ পরিবার তথা সমাজের কাছে চরমভাবে লজ্জাজনক এবং অগ্রহণযোগ্য।
জানা গেছে, অভিযুক্ত শিক্ষক নুরুল ইসলাম একজন বিবাহিত এবং তিন কন্যা সন্তানের জনক। সম্প্রতি তিনি হজ পালন করে এসেছেন এবং নামের পূর্বে ‘হাজী’ উপাধি যুক্ত করেছেন। তার বিরুদ্ধে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়া এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় তুলেছে।
স্থানীয় শিক্ষক সমাজ, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনেকেই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন—একজন ধর্মপ্রাণ, পরিবারকেন্দ্রিক মানুষ কীভাবে এমন অপকর্মে লিপ্ত হতে পারেন।
এই ঘটনায় মুজিবনগর মহিলা আদর্শ কলেজের পরিবেশে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এখন দেখার বিষয়—এই শিক্ষক নিজের পক্ষে কী জবাব দেন এবং কলেজ কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কী ধরনের চূড়ান্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করে


