Friday, December 5, 2025
Google search engine
Homeরাজনীতিআ.লীগের জুলাই গণহত্যার বিচারে শুরু হচ্ছে তদন্ত কার্যক্রম

আ.লীগের জুলাই গণহত্যার বিচারে শুরু হচ্ছে তদন্ত কার্যক্রম

জুলাই আন্দোলনে গণহত্যার দায়ে রাজনৈতিক দল হিসাবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে প্রসিকিউশন। ব্যক্তির অপরাধের দায় নির্ণয়ের পাশাপাশি আওয়ামী লীগকে বিচারের মুখোমুখি করতে প্রসিকিউশন এ উদ্যোগ নিয়েছে বলে তথ্য জানা গেছে।

যদিও আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনেও বিচারের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু দলটিকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে কিনা তা নিয়ে এতদিন সিদ্ধান্তহীনতা ছিল। সম্প্রতি প্রসিকিউশনের তরফ থেকে এ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনের ৩ ধারার উপধারা (২)-এর অধীন অপরাধ সংঘটন করেছে, আদেশ দিয়েছে-তাহলে ট্রাইব্যুনাল কোনো রাজনৈতিক দল ও তার অঙ্গসংগঠনকে শাস্তি দিতে পারবেন। আইনের এ ধারায় আওয়ামী লীগের বিচার করতে তদন্ত শুরু করতে চায় প্রসিকিউশন। ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগকে অপরাধী সংগঠন হিসাবে বিচারের মুখোমুখি করতে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ ও প্রাথমিক তদন্তের কাজ শুরু হয়েছে।

রোববার তাজুল ইসলাম  সাংবাদিকদের বলেন, দল হিসাবে আওয়ামী লীগের ব্যাপারে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এনডিএম (জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন) নামের একটি রাজনৈতিক দল অভিযোগ করেছে। প্রসিকিউশন তার ভিত্তিতে তদন্ত করছে। বলা যেতে পারে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দল ও অপরাধী সংগঠন হিসাবে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য প্রাথমিক তদন্তের কাজটা শুরু হচ্ছে। সেটা পুরোদমে শুরু হলে বলা যাবে আওয়ামী লীগকে বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়টা কতদূর এগিয়েছে। তাকে প্রশ্ন করা হয়, ‘এখন কি বলা যাবে আওয়ামী লীগের বিচার শুরু হয়েছে’-জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, হ্যাঁ, অভিযোগ এসেছে। তদন্ত সংস্থা এটা গুরুত্ব দিয়ে যাচাই-বাছাই করছে। এরপর শিগগিরই আনুষ্ঠানিক তদন্ত হবে। প্রসিকিউশনের কাছে দাখিল হওয়া অভিযোগে বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অপরাধ সংঘটনে সরাসরি জড়িত ছিল।

অপরদিকে, ট্রাইব্যুনালে দাখিল হওয়া বিভিন্ন অডিও-ভিডিও পরীক্ষায় দেখা গেছে, আন্দোলনকারীদের নিশ্চিহ্ন করতে দলীয় লোকজনকে নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা। সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে টেলিফোন কথোপকথনেও একই রকম নির্দেশনার বিষয়টি স্পষ্ট হয়। তার নিয়ন্ত্রণাধীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশের মাধ্যমে জুলাই হত্যাকাণ্ডসহ অপরাপর অপরাধ সংঘটন করেন যা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা বিভিন্ন অভিযোগ ও সাক্ষ্যসাবুদে উঠে এসেছে। এ বিষয়ে প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ যুগান্তরকে বলেন, আওয়ামী শাসনের সাড়ে ১৫ বছর শেখ হাসিনা প্রশাসনের পাশাপাশি দলীয় লোকদের দানবে পরিণত করেন। জনগণের বিরুদ্ধে দলীয় লোকদের ব্যবহার করেন। বিশেষ করে জুলাই আন্দোলনে দেশজুড়ে মানুষ হত্যায় তাদের সম্পৃক্ত করেন। এ অপরাধের দায় দলীয় লোকদের পাশাপাশি শেখ হাসিনার ওপর বর্তায়। ফলে দল হিসাবে আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া উচিত।

ট্রাইব্যুনাল রাজনৈতিক দলকে শাস্তি দিতে পারবে : ১০ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এতে ট্রাইব্যুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবেন। এতে বলা হয়, ‘এই আইন বা প্রযোজ্য অন্যান্য আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, যদি ট্রাইব্যুনালের কাছে প্রতীয়মান হয় যে কোনো সংগঠন এই আইনের ৩ ধারা উপধারা (২)-এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেছে, আদেশ দিয়েছে, চেষ্টা করেছে, সহায়তা করেছে, উসকানি দিয়েছে, মদদ দিয়েছে, ষড়যন্ত্র করেছে, সহযোগিতা করেছে অথবা অন্য যে কোনো ভাবে সেই অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করেছে, তবে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা থাকবে সংগঠনটির কার্যক্রম স্থগিত বা নিষিদ্ধ করার।’ ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা থাকবে ‘সংগঠনের নিষিদ্ধ ঘোষণার, এর নিবন্ধন বা লাইসেন্স স্থগিত অথবা বাতিল করার এবং এর সম্পত্তি জব্দ করার। আইনে সংগঠন শব্দটির সংজ্ঞায়নও করা হয়েছে। এই আইনের আওতায় সংগঠন বলতে যে কোনো রাজনৈতিক দলকেও বোঝাবে। পাশাপাশি দলের অধীনস্থ, সম্পর্কিত বা সংশ্লিষ্ট কোনো সংগঠন অথবা গোষ্ঠীকে বোঝাবে।’

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments