Saturday, April 27, 2024
Google search engine
Homeনির্বাচিত সংবাদশিক্ষার মানোন্নয়নে কোচিং ব্যবসা বন্ধ করতে হবে: রাষ্ট্রপতি

শিক্ষার মানোন্নয়নে কোচিং ব্যবসা বন্ধ করতে হবে: রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, দেশে শিক্ষাদান পদ্ধতি আন্তর্জাতিক মানসম্মত করার পদক্ষেপ নিতে হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা বিশ্ব প্রতিযোগিতায় সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যেতে পারে। এক শ্রেণির অসাধুচক্র ও কতিপয় বিপথগামী শিক্ষক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কোচিংয়ের রমরমা ব্যবসা করে যাচ্ছেন। শিক্ষার মানোন্নয়নে এই কোচিং ব্যবসা বন্ধ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার সকালে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। 

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। অনুষ্ঠানে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে প্রধান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং শিক্ষকরা অংশ নেন। এ সময় সাতজন গুণী শিক্ষককে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের জালিয়াতি থেকেও উত্তরণ ঘটাতে সরকার, মন্ত্রণালয়, শিক্ষক, অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা চাই দেশের প্রতিটি শিক্ষার্থী সুশিক্ষিত ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠুক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখুক। ছেলেমেয়েদের জিপিএ-৫ পাইয়ে দেওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। একই সঙ্গে তাদের নৈতিক শিক্ষায় সুশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। ছেলেমেয়েদের প্রতিভা বিকাশের পথ দেখাতে সব শিক্ষক ও অভিভাবকদেরকে সচেষ্ট হওয়ারও পরামর্শ দেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, ‘দেশের সমাজ ব্যবস্থায় এখনও শিক্ষকদের সম্মান ও মর্যাদা অন্য যে কোনো পেশার তুলনায় অনেক ঊর্ধ্বে। শিক্ষকগণ আধুনিক, বিজ্ঞানমনষ্ক এবং উন্নত জীবনবোধ ও নেতৃত্ব গুণসম্পন্ন নাগরিক তৈরির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে অবদান রেখে যাবেন।’

তবে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষক বিদেশে গিয়ে কতটুকু প্রশিক্ষণ নেন এবং দেশে ফিরে ক্লাসরুমে এর কতটুকু প্রয়োগ করেন সে বিষয়টিও মনিটরিং করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপ্রধান।

শিক্ষকদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সমাজ গঠনে ও দেশের সার্বিক উন্নয়নে আপনাদের কার্যকর ভূমিকা অপরিহার্য। আপনারা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ন্যায়-অন্যায়, সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য বুঝাবেন, মানবসেবা ও দেশপ্রেম এবং পিতা-মাতার প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার শিক্ষা প্রদান করবেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পিতা-মাতাতুল্য আচরণ করবেন। শাসন করবেন, কিন্তু শাস্তি নয়।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের শিক্ষা ক্ষেত্রে গৃহীত বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা ২০১৩ সালে ২৬১৯৩টি বেসরকারি এবং রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেন। এ ছাড়াও প্রায় ২৮ হাজার এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সরকার নিয়মিত প্রায় শতভাগ আর্থিক সুবিধা প্রদান করছে। এছাড়া শিক্ষকদের বেতন-স্কেল, আনুষঙ্গিক ভাতা, পদোন্নতিসহ যে কোনো অসঙ্গতি থাকলে তা দূর করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি। 

সরকারের পাশাপাশি শিক্ষক, অভিভাবক ও সুধীজনদেরকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের লেখাপড়ার মানোন্নয়নে এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় শহর-গ্রামের বৈষম্য নিরসনে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের প্রতিনিধি ড. সুসান ভাইজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, ঢাকা গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুলের সিনিয়র শিক্ষক ইসমত আরা মমতাজ এবং খিলগাঁও শান্তিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পল্লব কুমার ভৌমিকসহ প্রমুখ। 

অনুষ্ঠানে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৩’-এর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত করা হয়। অনুষ্ঠানে সাতজন কৃতি শিক্ষককে সম্মাননা দেওয়া হয়।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments