মার্কিন কারাগারে বন্দি পাকিস্তানি স্নায়ুবিজ্ঞানী ডক্টর আফিয়া সিদ্দিকীকে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই মুক্তি দেওয়া হবে। তার মুক্তির তদবিরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া প্রতিনিধি দলের সদস্য অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইকবাল জাইদি এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডক্টর জাইদি বলেছেন, ডক্টর আফিয়া গুরুতর স্বাস্থ্যগত জটিলতায় ভুগছেন। তবে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সোমবার (২০ জানুয়ারি) ক্ষমতা ছাড়ার আগে তার সাজা কমিয়ে দেবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, যদি বাইডেন পদক্ষেপ না নেন, তাহলে পাকিস্তান সরকার বিষয়টি সমাধানের জন্য নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।
ডক্টর জাইদি আরও জানান, তিন সদস্যের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল ডক্টর আফিয়ার মুক্তির তদবিরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। যদিও তাদের লক্ষ্য ছিল প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা; কিন্তু ভিসা পেতে বিলম্ব হওয়ার কারণে তাদের বৈঠকটি হয়নি। এর পরিবর্তে প্রতিনিধিদল বেশ কয়েকজন সিনেটর এবং পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে।
এছাড়া পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বাইডেনকে চিঠি লিখে মানবিক কারণে ডক্টর আফিয়ার মুক্তি মঞ্জুর করার আহ্বান জানিয়েছেন।
হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ১৬ বছর ধরে কারাদণ্ড ভোগ করছেন ডক্টর আফিয়া। এটি এমন একটি অপরাধ যার জন্য মার্কিন আইনে সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছর। তবে তাকে ৮৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে, যা বিরল।
ডক্টর জাইদি আরও বলেন, ড. আফিয়া ২০ বছর ধরে তার সন্তানদের থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। যদিও তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপকভাবে পরিচিত নন তবে ৯৯ শতাংশ পাকিস্তানি এবং মুসলিম বিশ্বের অনেকেই তার মামলার বিষয়ে অবগত বলেও জানান জাইদি।
তিনি আরও বলেন, তার (আফিয়া) মুক্তি পাকিস্তানের ২৫ কোটি নাগরিক এবং বিশ্বব্যাপী ২ বিলিয়ন মুসলিম জনসংখ্যার মাঝে আমেরিকার ভাবমূর্তি উন্নত করবে।
প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের মার্চ মাসে করাচিতে তিন সন্তানসহ ড. আফিয়াকে আটক করা হয়। এর পরের পাঁচ বছর তিনি নিখোঁজ ছিলেন যদিও ২০০৮ সালে জানা যায়, তিনি আফগানিস্তানে বন্দি ছিলেন। পরবর্তীতে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর করা হয়।
তার দুই সন্তান আহমেদ এবং মরিয়ম যথাক্রমে ২০০৮ এবং ২০১০ সালে মুক্তি পায়। কিন্তু আরেক ছেলে সুলাইমান কোথায় আছেন তা এখনও অজানা।