বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ ও বিশ্বনন্দিত ইসলামি বক্তা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ২১ মার্চ করা মামলার বাদী, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ তাদের দোসরদের উরশের নামে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পূর্নবাসনের আশংকার লাকসামে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় রেজাউল হক চাঁদপুরীর ওরশসহ সকল কর্মসূচি বন্ধের দাবী ও তাদের দোসরদের অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়।
মঙ্গলবার (৪ফেব্রুয়ারী) সকাল ১১টায় লাকসাম বাজার থেকে সর্বস্তরের নাগরিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে লাকসাম উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েক হাজার মানুষ অংশ গ্রহণ করেন। বিক্ষোভ মিছিলটি দৌলতগঞ্জ বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে লাকসাম থানা ও উপজেলা কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে উপজেলা কার্যালয়ের সামনে এক প্রতিবাদ বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয়।
সচেতন নাগরিক সমাজের যুগ্ম-আহবায়ক আবু বাকার মোহাম্মদ জাহিদ বলেন, আগামীকাল বুধবার দোগাইয়া দরবার শরীফের বার্ষিক ওয়াজ ও ওরশ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু লাকসামের সর্বস্তরের মানুষ এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছে। তিনি বলেন – বিশ্বনন্দিত ইসলামি বক্তা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার বাদী, তাজুল ইসলামের ঘনিষ্ট সহচর, ভন্ড পীর রেজাউল হক চাঁদপুরী ও তাদের দোসরদের উরশের নামে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পূর্নবাসনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সাধারণ জনগণকে নিয়ে এই ভন্ড পীরের বিরুদ্ধে গত কয়েকদিন ধরে প্রশাসনকে স্বারকলিপি ও ওরশ বন্ধের জন্য লিখিত দরখাস্ত দিয়েছি।
এ বিষয়ে সেইভ দ্যা হিউমিনিটির চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা দায়রাজজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১এর পাবলিক প্রসিকিউটর এড.বদিউল আলম সুজন বলেন -লাকসামের দোগাইয়া দরবার শরীফের বার্ষিক ওয়াজ ও ওরশ দীর্ঘ বছরের একটি কর্মসূচি। কিন্তু দোগাইয়া দরবার শরীফকে বিতর্কিত করে ফেলছে বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব রেজাউল হক চাঁদপুরী।মাহফিল ও ওরশ চলবে কি বন্ধ হবে, এটা একান্তই প্রশাসনের বিষয়। যে বিষয়টা এখন শোনা যাচ্ছে রেজাউল হক চাঁদপুরী নাকি ওরশের নামে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পূর্নবাসনের চেষ্টা করে যাচ্ছে।যা লাকসামবাসী কোনভাবেই মেনে নেবে না।
এ বিষয়ে লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা দোগাইয়া দরবার শরীফের পীরকে থানায় ডেকে পরিবেশ অনুকূলে না থাকায় এবছর ওরশ আয়োজন না করার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন – দু’পক্ষের উত্তেজনা বিষয়টি নজরে এলে মঞ্জুর আলম পারভেজ পীর সাহেবকে ওরশ আয়োজন না করার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তিনি ওরশ আয়োজনে অনড় থাকেন। তাই কুমিল্লা পুলিশ সুপারের অনুমতি নেয়ার জন্য উনাকে বলেছি।
এ বিষয়ে লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাউসার হামিদের সাথে কথা বললে তিনি জানান-দোগাইয়া দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষ যেহেতু এখনো প্রশাসনের অনুমতি পাননি। তাই ওরশ চলার কোন সুযোগ নেই। প্রশাসনের অনুমতি পেলে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
দোগাইয়া দরবার শরীফের বর্তমান পীর সৈয়দ মঞ্জুর আলম পারভেজ মুঠো ফোনে বলেন, আমি পীর না। আমি কেয়ার টেকার হিসেবে দরবারের কিছু খেদমত আঞ্জাম করছি। প্রায় ১৫ বছর ধরে মেডিক্যালি অ্যাপ্রুভ প্রক্রিয়ায় এখানে বাচ্চাদের সুন্নতে খৎনা করছি।তবে অভিযোগের বিষয়ে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। দরবারে তার সাথে দেখা করতে বললেও ফোনের লাইন কেটে দেন।
এসময় বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন, সচেতন নাগরিক সমাজের আহবায়ক মোঃ মহিউদ্দিন, সদস্য সচিব মোঃ ফখরুল ইসলাম মাসুম, সদস্য জিহাদ ইবনে সালেহ সজিব, আমান উল্লাহ আমান, শাহাব উদ্দিন হায়দার, আমজাদ হোসেনসহ লাকসাম উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েক হাজার মানুষ।