লাকসামের ঐতিহ্য ডাকাতিয়া নদীর (লাকসাম অংশ) তলদেশের প্রতিবন্ধকতা অপসারণ কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কাউছার হামিদ। এতেই গোটা লাকসামে এখন প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।
লাকসামের দূঃখ ঐতিহ্যের ডাকাতিয়া নদী আবার প্রান ফিরে পাবে এমন আনন্দ বইছে এখন সবার মাঝে। বিগত দিনে এ ধরনের কোনো উদ্যোগ কেউ না নেয়ার ফলে হঠাৎ এমন উদ্যোগ নেয়ায় এবং কৃষক ও সাধারণ মানুষের কষ্ট বুঝায় বর্তমান ইউএনও কাউছার হামিদের প্রশংসা করছেন সবাই। ডাকাতিয়া নদীর তলদেশের প্রতিবন্ধকতা অপসারণের এ উদ্যোগ একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে দাবী করছেন বিশিষ্টজনরা।
এর অংশ হিসেবে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আগামীকাল ২৮ ফেব্রুয়ারী (শুক্রবার) সকাল ৮ টা থেকে লাকসাম অংশের পৌরসভার ১, ৪, ৫, ৬, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মিশ্রী, শ্রীপুর, নশরতপুর, পেয়ারাপুর, উত্তর লাকসাম, রাজঘাট, দৌলতগঞ্জ বাজার এলাকা, গাজীমুড়া, পশ্চিমগাঁও, কান্দিরপাড়, বাকই, গোবিন্দপুর ও মুদাফরগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নে ডাকাতিয়া নদীর তলদেশের প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হবে। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এমন উদ্যোগ নেয়ায় সাধারণ মানুষের প্রশংসায় ভাসছেন লাকসামের ইউএনও কাউছার হামিদ।

নদীপাড়ের স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন- এক সময়ে ডাকাতিয়া নদীতে বড় বড় লঞ্চ, স্টিমার ও পাল তোলা নৌকা চলাচল করতে। কিন্তু নদীর উপর অপরিকল্পিতভাবে ব্রীজ নির্মাণ, দুইপাড় দখল করে অবৈধভাবে বাড়িঘর ও দোকানপাট নির্মাণ, নদীর মধ্যে বাধ নির্মাণ, বর্জ্য ফেলে পানি দূষণ, ভেসাল জালসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় ঐতিহ্যের এ নদী আজ বিলীন হতে বসেছে এবং বিভিন্ন স্থানে এ নদী বিলীন হয়ে গেছে। এক সময়ে এ অঞ্চলের কৃষি নির্ভর নদী ছিল ডাকাতিয়া। শুস্ক মৌসুমে সেচ কাজে কৃষকদের একমাত্র ভরসা ছিল এ ডাকাতিয়া নদী। কিন্তু ওই ডাকাতিয়ার সেই যৌবন আজ আর নেই। এটি এখন মরা খালে পরিনত হয়েছে। এই মরা খাল থেকে জীবিত নদীতে রূপান্তরিত করতে ইউএনও কাউছার হামিদ যে উদ্যোগ নিয়েছেন, সেটি একটি ভালো উদ্যোগ এবং তিনি প্রশংসার দাবিদার।
এ প্রসঙ্গে লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কাউছার হামিদ বলেন- ডাকাতিয়া নদীর ঐতিহ্য এখনো আছে। এক সময়ে এ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ছিল ডাকাতিয়া নদী। বড় বড় লঞ্চ, স্টিমার ও পাল তোলা নৌকা চলাচল করতো এ নদীতে। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নেমে আসা ডাকাতিয়া নদীটি উপমহাদেশের একমাত্র মহিলা নওয়াব মহিয়ষী নারী নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানীর বাড়ি ঘেষে বয়ে চলা এ নদীঢ় মিলিত হয়েছে চাঁদপুরের মেঘনা মোহনায়। ঐতিহ্যের এ নদীটিকে কোনো ভাবেই বিলীন হতে দেয়া যায়না বলেই ডাকাতিয়ার তলদেশের প্রতিবন্ধকতা অপসারণে আমার এই উদ্যোগ। পর্যায়ক্রমে এ নদীর দুইপাশ দখলমূক্ত করে এর নাব্যতাও ফিরিয়ে আনা হবে ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন- আগামীকাল শুক্রবার প্রাথমিকভাবে তলদেশের প্রতিবন্ধকতা অপসারণের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। এতে স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন লাকসাম সিটি রানার গ্রুপ, মানবতার তরে মানবপ্রেমী, গোবিন্দপুর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর মানবিক টিমসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে।
এছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ব্যাপক শ্রমিক কাজ করবে। এতে সকলের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। আশা করি ভালো কাজে সবাই সহযোগিতা করবেন এবং এগিয়ে আসবেন।