Monday, March 10, 2025
Google search engine
Homeজাতীয়বোতলজাত সয়াবিনের ‘সংকটের’ সুযোগে সানফ্লাওয়ার অয়েলের ছড়াছড়ি

বোতলজাত সয়াবিনের ‘সংকটের’ সুযোগে সানফ্লাওয়ার অয়েলের ছড়াছড়ি

খুচরা বাজারে এখনও পর্যাপ্ত বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। কালেভদ্রে কোনো কোনো দোকানে ৫০০ মিলিলিটার এবং ১ ও ২ লিটার ওজনের সয়াবিন তেলের বোতল পাওয়া গেলেও সোনার হরিণ ৫ লিটারের বোতল। তবে বাজারজুড়ে অধিকাংশ মুদি দোকান ও ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে দেশি-বিদেশি কোম্পানির চড়া দামের সানফ্লাওয়ার অয়েলের ছড়াছড়ি দেখা গেছে। সানফ্লাওয়ার অয়েলের পর্যাপ্ত সংখ্যক ছোট-বড় বোতল দোকানে দৃশ্যমান রাখা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিরপুরের ইসিবি, মানিকদী এবং মাটিকাটা এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই চোখে পড়েছে। দেখা গেছে, দোকানগুলোতে ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের কোনো বোতল দৃশ্যমান নেই। কিছু কিছু দোকানে ১ কিংবা ২ লিটারের বিভিন্ন কোম্পানির সয়াবিন তেলের বোতল রাখা আছে। তবে সে সংখ্যা খুবই কম। আর ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল একেবারেই নেই বলে ক্রেতাদের জানিয়ে দিচ্ছেন প্রায় সব দোকানদার। এর বিপরীতে দোকানের পণ্যের সারিতে দৃশ্যমান রাখা হয়েছে ৫ লিটার ওজনের সানফ্লাওয়ার অয়েল। ক্রেতারা এসে যখন দোকানদারের কাছে সয়াবিন তেলের ব্যাপারে জানতে চাইছেন তখন তারা ‘সানফ্লাওয়ার অয়েল’ দেখিয়ে দিচ্ছেন। এক্ষেত্রে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির সানফ্লাওয়ার অয়েল বাজারে রয়েছে।

দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, টিকে গ্রুপের ভিটালাইফ নামের ফর্টিফাইড এডিবল সানফ্লাওয়ার অয়েলের ৫ লিটারের বোতল ১ হাজার ৫০০ টাকা, কিংস সানফ্লাওয়ার নামের বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেডের ৫ লিটারের বোতল ২ হাজার ১০০ টাকা, কারনেল ব্র্যান্ডের ৫ লিটার ও ১ লিটারের বোতল যথাক্রমে ২ হাজার ৩০০ টাকা এবং ৪২০ টাকা, বোর্জেস ব্র্যান্ডের সানফ্লাওয়ার অয়েল ৫ লিটার ও ২ লিটারের বোতল যথাক্রমে ২ হাজার ৪৫০ টাকা এবং ৯৯৫ টাকা দামে বিক্রি করা হচ্ছে।

একইসঙ্গে ওলিটালিয়া, সানবিম, ফরচুন, ট্রুকো নামের বিভিন্ন ব্রান্ডের সানফ্লাওয়ার অয়েলেরও ব্যাপক ছড়াছড়ি দেখা গেছে।দোকানিরা বলছেন, আমাদের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে সয়াবিন তেল পরিবেশকরা দিতে পারছেন না। এই সংকট গত ৪ মাস ধরে চলছে। এর বদলে সানফ্লাওয়ার অয়েল পাওয়া যাচ্ছে। আমরাও সেটাই বিক্রি করছি।

তবে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বিরক্তি প্রকাশ করেন অধিকাংশ দোকানি। আব্দুল হান্নান নামের এক দোকানি বলেন, দশ কার্টন সয়াবিন তেল চাইলে পরিবেশকরা এক কার্টন দিচ্ছে। বাজারে কেন সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না সেটি তারাই বলতে পারবেন। আমাদেরকে যা দেওয়া হয় আমরা ঠিক তাই বিক্রি করি।

শরিফুল ইসলাম নামের আরেক দোকানি বলেন, অনেকেই সানফ্লাওয়ার অয়েল কিনে নিচ্ছেন। আমরা তো কাউকে জোরাজুরি করছি না। ১ লিটার কিংবা ২ লিটারের সয়াবিন তেলের যা বোতল আসছে সব তাৎক্ষণিকভাবেই দোকানে ওঠানো হচ্ছে। তবে সমস্যা হচ্ছে, একসঙ্গে অনেক বোতল দেখলে একজন কাস্টমারই সবগুলো কিনে নিয়ে যেতে চান। সেজন্য ডিসপ্লেতে কম কম ওঠানো হচ্ছে। কেউ চাইলে বোতল থাকলে বের করে দিচ্ছি।

অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, এত দীর্ঘ সময়েও এই সংকটের সমাধান এবং সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারাটা সরকারের ব্যর্থতা। বাজারে তেলের সরবরাহ কম হওয়ার সুযোগে অনেকেই বেশি দাম নিচ্ছেন। অনেক দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। আবার দোকানগুলোতে খোলা তেল পাওয়া গেলেও তা অনেক বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। যার ফলে সাধারণ মানুষ কষ্টে পড়েছে।

রাজন মাহমুদ নামের ক্রেতা বলেন, বোতলে খোলা সয়াবিন তেল ভরে তার দাম বোতলজাত সয়াবিন তেলের সমান রাখা হচ্ছে। আবার কিছু দোকানে বোতলজাত তেল পাওয়া গেলেও, অতিরিক্ত দাম নেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এগুলো দেখভাল করাটা সরকারের দায়িত্ব। তাদের উচিত পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা। এতসময় পরও এই সমস্যার সমাধান করতে না পারাটা দুঃখজনক। এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন এই ক্রেতা।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) মোহাম্মদ আলীম আখতার খানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments