Sunday, March 9, 2025
Google search engine
Homeতথ্য ও প্রযুক্তিনিজের তৈরি বিমানে আকাশে উড়ে তাক লাগালেন জুলহাস

নিজের তৈরি বিমানে আকাশে উড়ে তাক লাগালেন জুলহাস

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ষাইট ঘর তেওতা গ্রামের যুবক জুলহাস মোল্লা (২৮) নিজের তৈরি আরসি বিমান আকাশে উড্ডয়ন করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। জুলহাস পেশায় একজন ইলেকট্রনিক মিস্ত্রি।

আজ মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকাল ১১টার দিকে সব প্রস্তুতি শেষে উপজেলার জাফরগঞ্জের যমুনার চরে তার নিজ হাতে তৈরি বিমান আকাশে উড্ডয়ন করেন। মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শত শত মানুষ বিমানের এমন অভাবনীয় উদ্ভাবন দেখতে যমুনার পাড়ে ভিড় জমায়।

জুলহাস মোল্লা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এসএসসির পর আর লেখাপড়া করা হয়নি। পেশায় ইলেকট্রনিক মিস্ত্রি হিসেবে ঢাকায় কাজ করি। চার বছর আগে হঠাৎ মাথায় আসে ছোট ছোট রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে বিমান তৈরি করার। এর কিছুদিন পরে আল্টালাইট বিমান তৈরির কথা মাথায় আসে।

কিন্তু তাতে তেমন সফলতা আসেনি। পরে গত এক বছর চেষ্টা করে এই বিমানটি তৈরি করতে সক্ষম হই।’

তিনি আরো বলেন, ‘মূলত টাকার জোগান না থাকায় পাম্প ইঞ্জিন, আর অ্যালুমিনিয়াম, এসএস দিয়ে মূলত বিমানটি তৈরি করা হয়। বিমানটি ওজন হয়েছে ১০০ কেজি।

গতি পরিমাপের জন্য লাগানো হয়েছে একটি ডিজিটাল মিটার, অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে পাখা তৈরি করা হয়েছে। ইঞ্জিন চলবে অকটেন অথবা পেট্রল দিয়ে। ঘণ্টায় গতি হবে সর্ব্বোচ ৭০ কিলোমিটার।’

 

গত কয়েক দিন আগে বিমানটি পরীক্ষামূলক সফলভাবে আকাশে উড্ডয়ন করতে সক্ষম হই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি জীবনে কোনো দিন বিমানের উঠিনি। বিমানটি তৈরি করে আকাশে উড্ডয়ন করতে পেরে নিজের স্বপ্নও পূরণ করেছি।

প্রথম দিকে পরিবার ও এলাকাবাসী পাগল মনে করেছে। তবে এখন সবাই উৎস আর বাহবা দিচ্ছে।’

সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা পেলে এ নিয়ে কাজ করার আগ্রহ পোষণ করেন জুলহাস। তিনি দাবি করে বলেন, ‘আমার আগে কেউ বাংলাদেশে নিজে বিমান তৈরি করে আকাশে উড্ডয়নের ঘটনা নেই—অনেকেই চেষ্টা করেছিলেন, তবে সফল হননি।’

জুলহাসের ছোট ভাই নয়ন মোল্লা বলেন, ‘শুরু থেকে আমি ভাইয়ার সঙ্গে ছিলাম। সব কাজ আমি সঙ্গে থেকে করেছি। আমরা কোনো সময় দমে যাইনি। গত এক বছর দিনে আমরা পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা বিমান তৈরি করতে গবেষণা ও কাজ চালিয়ে গেছি।’

 

তেওতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমার এলাকার ছেলে জুলহাসকে নিয়ে আমরা গর্ব করি। ওর অসাধারণ মেধায় উদ্ভাবন করে ফেলেছে একটি বিমান। সরকারিভাবে তার প্রশিক্ষণ ও সহায়তার প্রয়োজন।’

মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মানেয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, ‘আমি গতকাল সংবাদ পেয়েই আজ মঙ্গলবার জুলহাসের এমন উদ্ভাবনী বিমান দেখতে এসেছি। আমি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জুলহাসকে প্রয়োজনীয় সহায়তার বিষয়ে চেষ্টা করব। সত্যিই প্রত্যন্ত গ্রামের একটি ছেলের এমন আবিষ্কার সবাইকে মুগ্ধ করেছে।’

সব প্রস্তুতি শেষে তিন থেকে চার মিনিট জুলহাস বিমানটি আকাশে উড্ডয়ন করে আবার নেমে আসেন। আজ মঙ্গলবার বাতাসের গতি বেশি থাকায় ঝুঁকি এড়াতে আর বেশিক্ষণ বিমানটি আকাশে উড্ডয়ন করা সম্ভব হয়নি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments