Tuesday, May 13, 2025
Google search engine
Homeসারাদেশসামিয়া হত্যার বিচার ও সংবাদকর্মীদের কটুক্তির প্রতিবাদে মানববন্ধন বিক্ষোভ

সামিয়া হত্যার বিচার ও সংবাদকর্মীদের কটুক্তির প্রতিবাদে মানববন্ধন বিক্ষোভ

কুমিল্লার লাকসামের ইক্বরা মাদ্রাসা ছাত্রী সামিয়ার মৃত্যুকে হত্যাকান্ড দাবি করে বিচার চেয়ে এবং উক্ত ঘটনা অনুসন্ধানরত স্থানীয় সংবাদকর্মীদেরকে অকথ্য ভাষায় কটুক্তিকারির গ্রেফতার চেয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে সামিয়ার, পরিবার, সহপাঠী, সুশীল সমাজ ও সাংবাদিক সংগঠনগুলো।


বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল দশটায় আলোচিত ইক্বরা মাদ্রাসার সামনে শুরু হওয়া মানববন্ধন শেষে লাকসাম বাজারে একটি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে লাকসাম প্রেসক্লাব, লাকসাম সাংবাদিক ইউনিয়ন, লালমাই প্রেসক্লাব, লাকসাম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র জনতা, সামিয়ার পরিবার ও সহপাঠীরা।


গত ১৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভার ইকরা মাদ্রাসার পাঁচতলা ভবনের জানালার ফাঁক দিয়ে পড়ে সামিয়ার (১৩) মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে লাকসামের ইক্বরা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। আজকের কর্মসূচীতে সামিয়ার মা, দাদা ও মামা তাদের এই দাবি প্রত্যাখান করে এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে এর সুষ্ঠু বিচার চেয়ে বক্তব্য প্রদান করে।


এ ঘটনায় অনুসন্ধানরত সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয় মাদ্রাসা প্রধান জামাল উদ্দিন এবং মাদ্রাসার পরিচালক আজিজুল ইসলাম এর জামাতা মইনুল ইসলাম জাফরি। তারা সাংবাদিক, সুশিল সমাজ ও কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অশ্লীল ভাষায় কটুক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট করে।


বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, লাকসাম প্রেসক্লাবের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কালের কন্ঠ প্রতিনিধি মুজিবুর রহমান দুলাল, আহবায়ক মনির আহমেদ যুগ্ম আহবায়ক যায়যায়দিন প্রতিনিধি আরিফুর রহমান স্বপন, সদস্য সচিব বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রতিনিধি ফারুক আল সারাহ, সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম, সাংগঠনিক সম্পাদক ডেইলি প্রেজেন্ট টাইম প্রতিনিধি সেলিম চৌধুরী হিরা, সহ সাধারণ সম্পাদক দৈনিক আমার সংবাদ প্রতিনিধি আমজাদ হোসেন, লালমাই প্রেসক্লাব সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুমিল্লার কাগজ প্রতিনিধি প্রদীপ মজুমদার, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রতিনিধি প্রমুখ।


বক্তারা বলেন, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। জানালার একটি ফাঁক দিয়ে যদি মেয়েটি নিচে পড়ে থাকে তবে গ্রীলটি মেরামত করা হয়নি কেন? আর ৫ তলা থেকে একটি ১২ বছরের মেয়ে পড়লে তার হাড়গোড় ভেঙ্গে রক্তপাত হওয়ার কথা। ঘটনা তদন্ত বিশেষ তদন্ত টিম গঠন করার দাবি করেন বক্তারা। পাশাপাশি অনুসন্ধানরত সংবাদকর্মীদের কটুক্তিকারি মইনুল ইসলাম জাফরিকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের আলটিমেটাম দেয়া হয়। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচীর হুশিয়ারি দেয় বক্তারা। এসময় লাকসামের সকল সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন।


উল্লেখ্য গত ১৮ এপ্রিল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। বিষয়টি রাতেই জানাজানি হয়। এর আগে গত ১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে মাদ্রাসার পাঁচতলার একটি জানালার ফাঁক দিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হয় বলে দাবি করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। যার কোন সাক্ষী ও সিসিটিভি ফুটেজ সরবরাহ করতে পারেনি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। বরং সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে অনুসন্ধানরত সংবাদকর্মীদের সাথে লুকোচুরি করতে দেখা গেছে।


নিহত সামিয়ার পরিবারের দাবি, আমরা সামিয়াকে মাদ্রাসা থেকে বাড়িতে আনতে গেলে মাদ্রাসার মুহতামিম জামাল উদ্দিন আমাদেরকে উচ্চস্বরে গালিগালাজ ও হেরেস্তা করে, এবং মাদ্রাসার যে দারোয়ান সে আমাদেরকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। পরে দুজন মহিলা শিক্ষক সামিয়াকে জোরপূর্বক উপরে নিয়ে যায়, এ সময় সামিয়া জোরে চিৎকার করতে দেখা যায়, কিন্তু তারপরেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। সামিয়ার চাচা সাইদুল হাসান জানান মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন কথা বলে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে। পাঁচ তলা থেকে একটি মেয়ে রাস্তায় পড়লে তার হাড়-গুড় ভেঙ্গে জায়গায় মৃত্যু হওয়ার কথা, কিন্তু সেখানে আমি তার শরীর থেকে একটু রক্ত পর্যন্ত বের হতে দেখিনি। তিনি আরো জানান সামিয়া মৃত্যুর আগে বলতে শোনা গেছে বোরকা পরহীত কোন ব্যক্তি পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments