Friday, December 5, 2025
Google search engine
Homeজাতীয়লাকসামে নিখোঁজ চিরচেনাদেশীয় ৫০ প্রজাতির মাছ

লাকসামে নিখোঁজ চিরচেনাদেশীয় ৫০ প্রজাতির মাছ



কুমিল্লার বৃহত্তর লাকসাম উপজেলায় মানুষের জীবন যাত্রায় নানামুখি উন্নয়ন প্রকল্পে প্রান সঞ্চালন ঘটলেও কালের আর্বতে অনেক কিছুর মাঝে গ্রামাঞ্চলের চিরচেনা প্রায় ৫০ প্রজাতির দেশীয় মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে ভয়াবহ বন্যার তান্ডবে এ অঞ্চলের মৎস্য খামার গুলো ক্ষতিগ্রস্থ হলেও বর্তমানে পানি শূন্য নদ-নদী, খাল-বিল। ফলে এ অঞ্চল থেকে দেশীয় মাছের আকাল চলছে।


স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, এ অঞ্চলের নদী-নালা , খাল-বিল ও পুকুর-জলাশয়গুলো নানাহ কারনে দেশীয় মাছ শূন্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব, বন্যা, জলাবদ্ধতা, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, কারেন্ট জালের অবাধ ব্যবহার, নিয়ম বর্হিভূত কীটনাশক-রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার, জলাশয় দূষন, নদ-নদীর নাব্যতা হ্রাস, বাঁধ দিয়ে মৎস্য চাষ, অবাধ ড্রেজিং বানিজ্য, মাটি ভরাট ছোট ছোট মাছ ধরা, বিদেশী লাভজনক আগ্রাসী মাছের চাষ, মাছ প্রজননে নানাহ বির্তকিত নীতিমালা, স্থানীয় মৎস্য বিভাগের দায়িত্বহীনতা ও আন্তরিকতার অভাবে এলাকায় মৎস্য চাষ কিংবা বিপননে মারাত্মক প্রভাবে ৫০ জাতের দেশীয় মাছ এখন এলাকায় নিখোঁজের তালিকায়। একটা সময়ে দেশীয় প্রজাতির মাছগুলো এলাকার মানুষের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে রপ্তানি করতো স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জেলেরা। অথচ সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আজ অস্তিত্ব সংকটে পড়া দেশীয় মাছগুলোর মধ্যে কৈ, মাগুর, শিং, পাপদা, টেংরা, পুঁটি, চাপিলা, শৈল, টাকী, গঁজার, বোয়াল, আউ, বাইলা, মেনী, বাইন, চিংড়ি, কাচকী, চাঁন্দা, চিতল, টেঁয়াবৈচা, বুঁতি, খৈইয়াসহ ৫০ প্রজাতির মাছ। তবে লাভজনক বিধায় দেশী-বিদেশী নানাহ আগ্রাসী মাছ চাষে আগ্রহ বাড়ছে এ অঞ্চলের চাষীদের।


বিশেষ করে জেলা দক্ষিনাঞ্চল এলাকার হাট-বাজারগুলোতে দেশীয় মাছের আমদানী নেই। এ অঞ্চলের মানুষ নানাহ মাধ্যমে প্রচুর দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষ করতো। অনেকে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত মাছগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাতো। কিন্তু সময়ের বিচারে জনসচেতনার অভাবে এবং স্থাণীয় মৎস্য বিভাগের নজরদারী না থাকায় ওইসব মাছ পাওয়া যেন সোনার হরিণ। বর্তমানে মৎস্য প্রজনন নানাহ খাতগুলোতে বির্তকিত কর্মকান্ডের জন্যে দেশীয় প্রজাতির মাছগুলো বংশ বিস্তারে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে ফলে এ অঞ্চলে দেশীয় প্রজাতির মাছগুলোর আকাল অবস্থা বিরাজ করছে। এছাড়া এলাকায় অসংখ্য মৎস্য সমিতির কর্মকান্ড নিয়ে স্থানীয় মৎস্য বিভাগের বির্তকিত ভূমিকায় দেশীয় প্রজাতির মৎস্য প্রজনন ও বিপননে মারাত্মক ঝুঁকি বাড়ছে। উপজেলা মৎস্য হেচারীতে আজ লাল বাতি। বিগত ৫/৬ বছরে বিভিন্নখাতে উন্নয়ন চিত্রে ফুটে উঠেছে ওই হেচারীর আরব্য কাহিনীর মতো পকেট বানিজ্যের অজানা তথ্য।


অপরদিকে এ অঞ্চলের ডাকাতিয়া নদী সংযোগ প্রায় অর্ধশতাধিক খাল ও পুকুর-জলাশয় জবরদখল, ভরাট বানিজ্যে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছগুলো দিন দিন এ অঞ্চলের খাদ্য তালিকা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এদিকে গত ১৫দিন যাবত উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাউছার হামিদের আন্তরিকতায় এ অঞ্চলের প্রায় ৯টি খাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সংস্কার করেছেন। তারপরেও নদী-খালগুলো জবর-দখল থেকে মুক্ত হয়নি।


এ ব্যাপারে জেলা-উপজেলা মৎস্য দপ্তরগুলোর একাধিক কর্মকর্তার মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments