Friday, December 5, 2025
Google search engine
Homeজাতীয়হু হু করে বাড়ছে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি

হু হু করে বাড়ছে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি

তানভীর দিপু:
৪৮ ঘন্টার টানা বর্ষণ ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে গোমতী নদীর পানি পানি হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে। এতে করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে গোমতীর চর ও দুই তীরের বাসিন্দাদের মাঝে। গেলো বছরের আগস্টে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় গোমতীর বাঁধ ভেঙ্গে পাশে তিন উপজেলা প্লাবিত হয়ে যাওয়ার ফলে এবার পানি বাড়তে থাকায় সে শঙ্কা আরো বেড়েছে। 


কুমিল্লার কোল ঘেষে বয়ে চলা গোমতী নদীর পানি প্রতি ঘন্টায় ১০ সেন্টি মিটার করে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর ফলে নদীর বাঁধের ভেতর জমি-জমা ও বসতি ডুবতে শুরু করেছে।  তবে নদীর পানির উচ্চতা বুধবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিপদ সীমার ৭ ফুট নিচে রয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালীউজ্জামান। 

 
এদিকে মঙ্গলবার বিকেল তিনটা থেকে বুধবার বিকেল তিনটা পর্যন্ত কুমিল্লা জেলায় ১২৯ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গোমতীর চরে বসবাসরত মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ারও সতর্কতা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া টানা ভারী বৃষ্টিপাতের শহরের নিম্নচল পানিতে ডুবে গেছে,  জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে নিচু এলাকা গুলোতে। 


বুধবার দুপুরে গোমতী নদীর টিক্কার চর, চানপুর ব্রিজ ও সংরাইশ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কিছু কিছু স্থানে চরাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে।
সংরাইশ এলাকার বাসিন্দা নূরে আলম বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি পানি ঘরের একদম কাছাকাছি চলে এসেছে। আমরা খুব আতঙ্কে আছি। গত বছর বন্যায় আমাদের ঘরবাড়ি ভেসে গিয়েছিল। এলাকার লোকজন মিলে আমাদের নতুন ঘর তুলে দিয়েছিল। আবার যদি ঘর ভেসে যায়, তাহলে আমাদের পথে পথে থাকতে হবে।’


টিক্কার চর এলাকার পারভেজ আলম জানান, ‘গতকাল বিকেলেও এত পানি ছিল না। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি পানি অনেক বেড়েছে। এভাবে বাড়তে থাকলে বিকেলের মধ্যে পানি বিপদসীমার ওপরে চলে যেতে পারে।’


এ বিষয়ে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভির আহমেদ বলেন, ‘গোমতীর পানি এখনো বিপদসীমার ১০ ফুট নিচে আছে। আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে পানি না এলে পরিস্থিতি তেমন খারাপ হবে না।’


তিনি আরো বলেন, ‘গোমতীর চরে বসবাসরত মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রশাসন সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। হঠাৎ পানি এভাবে বাড়বে, তা আমরা আগে বুঝতে পারিনি। আমরা সরেজমিনে গোমতীর পাড় ঘুরে দেখছি।’
কুমিল্লা জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, কুমিল্লায় বিকাল ৩ টা থেকে আজ বুধবার বিকাল ৩ টা পর্যন্ত ১২৯ মিলিমিটার ।  বৃহষ্পতিবার সারাদিনও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কুমিল্লার পাশাপাশি ভারতের ত্রিপুরা অঞ্চলেও ভরী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। 


কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খাঁন মোহাম্মদ ওয়ালীউজ্জামান জানান, বুধবার বিকেল ৫ টা পর্যন্ত গোমতী নদীর পানির উচ্চতা ৮.৫ মিটার পর্যন্ত উঠেছে।  বিপদসীমা ১১.৩ মিটার। আমাদের পর্যবেক্ষণের প্রতি ঘন্টায় ১০ সেন্টিমিটার করে গোমতী নদীর পানির উচ্চতা বাড়ছে। টানা বৃষ্টির উপর নির্ভর করছে আমরা কতটুকু বিপদের মুখে আছি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments