Friday, December 5, 2025
Google search engine
Homeজাতীয়লাকসামে হাঁস-মুরগী ও গোবাদি পশুর খামার ঝুঁকিতে

লাকসামে হাঁস-মুরগী ও গোবাদি পশুর খামার ঝুঁকিতে

মশিউর রহমান সেলিম, লাকসাম, কুমিল্লা:
কুমিল্লার বৃহত্তর লাকসাম উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পারিবারিক পর্যায়ে যত্রতত্র ভাবে গড়ে উঠা উন্নত জাতের হাঁস, মুরগী ও গবাদি পশুর খামার গুলোতে বর্তমানে সুষ্ঠ পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে স্বাভাবিক উন্নয়ন চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে এবং আর্থিক সংকটে পড়ে জেলা দক্ষিনাঞ্চলের উপজেলাগুলোর কয়েক’শ হাস-মুরগী ও গোবাদি পশু খামার বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। এমনকি উপজেলা পশু সম্পদ দপ্তর কর্মকর্তাদের দেউলিয়াত্ব এবং প্রয়োজনীয় সুষম খাদ্য ও আর্থিক সহায়তার অভাবসহ বিভিন্ন প্রতিকুলতার অভিযোগ রয়েছে প্রচুর। তবে খামার মালিককরা সরকারি নিয়ম-নীতি মানছে না। ফলে সরকারি দপ্তর কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতায় সরকার বছরে হারাচ্ছে কয়েক লক্ষ টাকার রাজস্ব আয়। এছাড়া হাটবাজারগুলোতে ভেজাল গো খাদ্য এবং মৎস্য-মুরগী খাদ্যে ভেজাল তো আছেই। বর্তমানে গো মাংস, খাবার এবং মৎস্য ও মুরগীর দাম বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। গত বন্যার তান্ডবে কয়েকশ হাস, মুরগীর খাবার ও গোবাদি পশুর খামার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

পোল্ট্রি ও পশু খামারিদের একাধিক সূত্র জানায়, জেলা দক্ষিনাঞ্চলের উপজেলাগুলোর স্থানীয় ভাবে পুষ্টিকর খাদ্য ডিম ও গোস্তের যোগান বৃদ্ধির পাশাপাশি নি¤œআয়ের পরিবারের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা অর্জনের লক্ষে সর্বত্র পারিবারিক পর্যায়ে বেশ কিছু হাঁস-মুরগীর খামার যত্রতত্র ভাবে গড়ে উঠেছে। সরকারী সংশ্লিষ্ট দপ্তর কর্মকর্তাদের নজরদারী ও বিনাসুদে ঋণ, খামারীদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকা, খাদ্য ও বিদ্যুৎতের মূলবৃদ্ধিসহ বর্তমান বাজারে খাদ্য-ঔষধসহ আনুসাঙ্গিক সকল পন্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় মহাবিপাকে পড়েছে ওইসব দরিদ্র খামারীরা। এছাড়া উপজেলা পশুসম্পদ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো যেন ঘুমিয়ে আছে। বিশেষ করে পুরো এলাকাই নানান কারনে ক্ষতির মুখে প্রান্তিক খামারীরা। যেন হাঁস-মুরগী ও গবাদী পশুর খামারী ব্যবসা দিন দিন ছোট হয়ে আসছে। নানান পরিস্থিতির কারনে বাচ্ছা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গুলো বছরে শত কোটি টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে উৎপাদন ও দাম নিয়ন্ত্রন করা যেতো তাহলে বাজার কিছুটা নিয়ন্ত্রন থাকতো এবং বাজার ব্যবস্থা প্রতিযোগিতা মুলক হতো।

সূত্রগুলো আরও জানায়, জেলা দক্ষিনাঞ্চলের উপজেলাগুলোতে প্রায় ৫ শতাধিক খামার বন্ধের ঝুঁকি ও কয়েকশ শ্রমিক বেকার হওয়ায় আশংকা করছেন অনেকেই। ইতি মধ্যে অনেকগুলো খামার বন্ধ হয়েও গেছে। আবার কেউ কেউ খাদ্য-ঔষধ বাকী কিনে মুরগী খামার গড়ে তুললেও লোকসানের মুখে পড়ে দেনার দায়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এছাড়া ৫ উপজেলায় যত্রতত্র গড়ে উঠা পোল্ট্রি ও গোবাদি পশু খামারগুলো পরিবেশ, স্বাস্থ্য দপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের নিবন্ধন কিংবা প্রত্যায়ন পত্র ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে। উপজেলা গুলোর হাট-বাজারে ভেজাল ও নি¤œমানের পশু খাদ্য ও ফিড ব্যবসায়ীদের অবৈধ ব্যবসার দৌরাত্বে সকল শ্রেণির খামারিরা অনেকটাই আতংক অথচ এসবের দিকে উপজেলা পশু সম্পদ দপ্তর কর্মকর্তাদের রহস্যজনক নিরব ভূমিকা নিয়ে এলাকার জনমনে নানাহ বির্তক উঠেছে।

ভুক্তভোগীদের একাধিক সূত্র জানায়, গ্রামের মানুষগুলো রোগাক্রান্ত হাঁস, মোরগ ও গবাদি পশু নিয়ে আজ মহাবিপাকে পড়েছে। ওই বিভাগের কর্মকর্তারা সরকারী চাকরীর পাশাপাশি হরেক রকম ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ প্রাইভেট প্র্যাকটিস নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। সাধারন জনগণ দপ্তরে এসে হাস-মুরগীর বিভিন্ন রোগের ঔষধ পত্র টাকা ছাড়া মিলছে না, আবার দপ্তরের কর্মকর্তাদের অনেকেই ২/৫ শত টাকার বিনিময়ে খামার মালিকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা সেবার নামে ঔষধ পত্র বিক্রি ও নিজেদের প্রতিষ্ঠান থেকে হাঁস-মুরগীর খাদ্য ক্রয় করতে বাধ্য করছেন বলে দাবী ভোক্তভোগীদের। অপরদিকে এ ব্যাপারে সরকারি ভাবে কোন আর্থিক ঋণ দানের ব্যবস্থা নেই। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে উৎকোচের মাধ্যমে সাইনবোর্ড সর্বস্য সমিতির ব্যানারে হাঁস-মুরগীর খামার বাবত সামান্য পরিমান ঋণ পাওয়া গেলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা সামান্য।

এ ব্যাপারে জেলা-উপজেলা পশু সম্পদ দপ্তর কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে একাধিক বার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments