Wednesday, December 10, 2025
Google search engine
Homeজাতীয়লাকসাম-মনোহরগঞ্জের সরকারি খালগুলো অস্তিত্বের হুমকিতে

লাকসাম-মনোহরগঞ্জের সরকারি খালগুলো অস্তিত্বের হুমকিতে

মশিউর রহমান সেলিম, লাকসাম, কুমিল্লা:
কুমিল্লর লাকসাম-মনোহরগঞ্জ উপজেলাসহ পৌর শহরের চর্তুদিকে জবর দখলে বিপন্ন হয়ে পড়েছে সরকারি খাল, পুকুর, ডোবা ও নদীগুলো। বর্ষাকালের শুরু থেকে টানাবর্ষন ও থেমে থেমে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে এলাকার খাল-পুকুর ও ডাকাতিয়া নদীর পানি পঁচে গেছে। অবনর্নীয় দূভোর্গ পোহাতে হচ্ছে এ অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষকে। গত বছর সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাউছার হামিদ পৌরসভা ও উপজেলার প্রধান প্রধান সরকারী খালগুলো পরিস্কার ও সংস্কার এবং উচ্ছেদ অভিজান করলেও জবর দখলকারীদের দৌরাত্ব এখানো কমেনি। এ অঞ্চলের একমাত্র ডাকাতিয়া নদীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক খাল জবর দখলসহ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নামার কোন জায়গা নেই। ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে পৌরশহরের ৯টি ওয়ার্ডসহ উপজেলা দুটোর জন চলাচল এবং সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটাই ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। প্রায় এলাকার মানুষ বর্ষাকালে জলাবদ্ধতার কারনে হাটে-বাজারে যেতে পারে না। পৌর শহরের কাঁচা সড়ক ছাড়াও উপজেলা দুটোর নিম্নাঞ্চলের একাধিক কাঁচা-পাকা পথগুলো এখনও খানা-খন্দে ভরা। ব্যস্ততম সড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনায় শহরের অলি-গলিসহ এলাকার পরিবেশকে বেসামাল করে তুলেছে। সরকারি খালগুলো জবর দখল করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা আবাসিক ভবন ও বিপনী বিতান গড়ে তুলেছে। অথচ স্থানীয় ভূমি অফিস পৌরসভা, উপজেলা, জেলা পরিষদ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা রহস্যজনক কারনে নিরব দর্শক।

জানা যায়, ডাকাতিয়া নদীসহ সংযোগ খালগুলো এ উপজেলার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম। সরকারী খালগুলোর মধ্যে চাইলতাতলী, ফতেপুর, ঘাগৈর, বেরুলা, কার্জন, মেল্লা, কুচাইতলী ও ছিলনিয়া খালের অবস্থা বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে। ওইসব খালগুলো জবর দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি প্রবাহ গতিহীন। তার উপর ময়লা আবর্জনাসহ মিল-কারখানার বিষাক্ত পানি জলাবদ্ধ হয়ে এ অঞ্চলের বিশুদ্ধ পানির ব্যবহার মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ে নানাহ রোগের আতংকে রয়েছে সকল পেশার মানুষ। ইতিমধ্যে খালের উপর ব্রীজ ও কালভাটগুলোর প্রবেশ পথ বন্ধ হয়ে গেছে। পৌর এলাকাসহ উপজেলা দুটোর নিম্নাঞ্চলের ওইসব গ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে অতীতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তেমন কোন প্রদক্ষেপ না নেওয়ায় প্রতিনিয়ত বর্ষাকালের শুরুতেই এলাকার জনজীবন মারাত্মক হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে।

জেলার দক্ষিনাঞ্চল জলাখ্যাত এ উপজেলা দুটোর মধ্যে লাকসাম শহরে ১ম শ্রেণীর একটি পৌরসভা। প্রায় লক্ষাধিক লোকের বসবাস। প্রতিনিয়ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি এলাকার এ সমস্যা মারাত্মক দূর্ভোগ বয়ে আনছে। প্রত্যেক বছর বর্ষাকালের সময়ে এলাকার মানুষ জলাবদ্ধতার সম্মুখিন হতে হয়। স্থানীয় প্রশাসন জবরদখলকারী ও নদী-খালের ভরাট নিরসনে কার্যকরী কোন প্রদক্ষেপ না নিলে, আগামী দিনগুলোতে মানুষের দূর্ভোগ আরো চরম আকার ধারন করবে। খাল- নদী, পুকুর-ডোবা ও জলাশয়ের উপছে পড়া পানিতে এলাকার বাড়ী-ঘরে পানি ঢুকে এলাকার পরিবেশ মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে। এছাড়া জলাবদ্ধতায় কাঁচা-পাকা সড়কের অবস্থা অত্যান্ত নাজুক। শহর এলাকার নদী,খাল ও ড্রেনেজ দিয়ে পানি নামতে না পারলে এলাকার জন দূর্ভোগ আরো কঠিন হয়ে দাঁড়াবে অভিমত স্থানীয় পরিবেশবিদদের।

এ দিকে শহর এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরনে লাকসাম পৌর কর্তৃপক্ষ চলমান অর্থবছরে শত কোটি টাকা ব্যয়ে নানামুখী উন্নয়ন কর্মকান্ড এবং শহরের প্রধান প্রধান স্থানে ডাকাতিয়া নদী সংযুক্ত ড্রেনেজ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছেন এবং এ ছাড়া নাগরিক সুবিধা বাড়াতে আগামী কিছুদিনের মধ্যে আরো ব্যাপক নতুন নতুন উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments