ভারতের রাজধানী দিল্লিতে প্রতিদিন শত শত মোবাইল ফোন চুরি বা ছিনতাই হয়। ফোন চুরি বা ছিনতাই হওয়ার পর ভুক্তভোগীেদের পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ আইএমইআই নম্বরের মাধ্যমে ফোনগুলো ট্র্যাক করার চেষ্টা করে। এভাবে কখনও মোবাইল উদ্ধার করা গেলে সেটি তার মালিকের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তবে চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন নিয়ে বড় ধরনের তথ্য প্রকাশ করেছে দিল্লি পুলিশ। তারা জানতে পেরেছে, দিল্লিতে চুরি হওয়া বহু মোবাইল ফোন বাংলাদেশে ব্যবহৃত হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ হয়ে ফোনগুলো বাংলাদেশে ঢোকে। শনিবার ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লিতে কর্মরত অ্যান্টি নারকোটিক্স সেলের ইন্সপেক্টর বিষ্ণু দত্ত এবং হেড কনস্টেবল মোহিত এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন। সাধারণত চুরি যাওয়া মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর ট্র্যাক করার জন্য সেগুলো নজরদারিতে রাখা হয়। পুলিশ চুরি যাওয়া মোবাইলে একটি সিম সক্রিয় হওয়া এবং তার অবস্থান শনাক্ত করার জন্য অপেক্ষা করে। তবে চুরি যাওয়া মোবাইল ফোনগুলো ট্র্যাক করা কঠিন হয়ে পড়লে তাদের সন্দেহ হয়।
বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়। ফোনগুলো যাচ্ছে কোথায় বা এগুলো কেন ট্র্যাক করা যাচ্ছে না সে প্রশ্নের খোঁজে নেমে তারা পেলেন আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেটের সন্ধান। অখিল আহমেদ, নওয়াব শরীফ ও সাবির সরদার নামে তিন যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ১১২টি ফোন উদ্ধার করা হয়। বেশির ভাগ ফোনই দামি। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ফোনগুলো চুরি হয়েছে বা ছিনতাই করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ৫ কোটি টাকার ২২৪০টি মোবাইল ফোন বিক্রি
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, চুরি হওয়া মোবাইলগুলো কুরিয়ারের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশে পাচার করা হয়। এ পর্যন্ত ১৬০টি পার্সেল বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। একটি পার্সেলের মধ্যে ১৪টি ফোন থাকে। অভিযুক্তরা এখন পর্যন্ত ৫ কোটি টাকা মূল্যের ২২৪০টি মোবাইল ফোন বাংলাদেশে পাঠিয়েছে।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, অখিল আহমেদ ও নওয়াব শরীফ দিল্লিতে মোবাইল মেরামতের দোকান চালান। সাবির একই কাজ করেন পশ্চিমবেঙ্গে। চুরি করা, ছিনতাই করা মোবাইল ফোন কিনে বাংলাদেশে পার্সেল করে। এই সিন্ডিকেট আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিচালিত হচ্ছে।
একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা শুধুমাত্র অ্যান্ড্রয়েড ফোন চুরি করতেন, কারণ তারা আইফোনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভাঙতে পারতেন না।
হিন্দুস্থান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সাদ্দাম নামে এক ব্যক্তির কাছে ফোনগুলো পাচার করা হতো।