নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র নিষিদ্ধ হল জনপ্রিয় চীনা সামাজিকমাধ্যম টিকটক। নতুন আইনি বাধ্যবাধকতায় শনিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্র টিকটক অ্যাপ ব্যবহারকারীদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এটা এমন সময়ে ঘটল, যখন দ্বিতীয় মেয়াদে ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউজে ক্ষমতায় বসতে যাচ্ছেন।
এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ফরাসী বার্তাসংস্থা এএফপি।
আইনটি কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে, ব্যবহারকারীদের একটি বার্তা পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার আইন বাস্তবায়িত হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, এর মানে হচ্ছে এখন আপনি টিকটক ব্যবহার করতে পারবেন না।
বার্তায় আরও বলা হয়, আমরা সৌভাগ্যবান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাদের সঙ্গে কাজ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন এবং তিনি অফিস গ্রহণ করার পর টিকটক পুনরায় চালু করার জন্য একটি সমাধান নিয়ে কাজ করবেন। দয়া করে আমাদের সঙ্গে থাকুন!
মাসব্যাপী আইনি লড়াইয়ের পর শুক্রবার মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট একটি আইন অনুমোদন করেছে, যা জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে টিকটক নিষিদ্ধ করতে বলেছে, যদি না তার চীনা মালিকরা অ্যাপটি বিক্রি করে কোনো মার্কিন মালিকদের কাছে হস্তান্তর না করে। ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত এটার সময়সীমা ছিল। কিন্ত তার কয়েক ঘণ্টা আগে অ্যাপটি আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্রে।
টিকটকের জনপ্রিয়তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক, যা হাজার হাজার ব্যবহারকারীকে বিশ্বব্যাপী সেলিব্রিটি বানিয়েছে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে, ট্রাম্পের সমর্থনও ছিল উল্লেখযোগ্য। এমনকি ট্রাম্প টিকটকের মাধ্যমে তরুণ ভোটারদের সাথে সংযোগ স্থাপন করেছেন, যা নভেম্বরের নির্বাচনে তার বিজয়ে সহায়ক হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ১৭ কোটি গ্রাহক রয়েছে।
শনিবার চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে টিকটক নিয়ে আলোচনা করার পর ট্রাম্প এনবিসি নিউজকে বলেন, আমি ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ দেওয়ার বিষয়ে ভাবছি, এটি উপযুক্ত হবে। যদি আমি এটি করি, আমি সম্ভবত সোমবার এটি ঘোষণা করব।
এই আইন অনুযায়ী, অ্যাপল এবং গুগল তাদের অ্যাপ স্টোর থেকে টিকটক অপসারণ করতে বাধ্য হবে এবং নতুন ডাউনলোড বন্ধ করবে। যদি তারা তা না করে, তাদের ৫,০০০ ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। এই বিষয়ে শনিবার কোনো মন্তব্য করতে ইচ্ছুক ছিল না বাইটড্যান্সে, অ্যাপল কিংবা গুগলের কোনো প্রতিনিধি।
এর আগে হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়, বিদায়ী বাইডেন প্রশাসন টিকটককে রক্ষায় ব্যবস্থা নেবে না। টিকটকের ভবিষ্যত ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়।