ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, টেলিগ্রামের মতো টুল ব্যবহার করে ছবি, ভিডিও ও মেসেজ শেয়ার করা যায়। বর্তমানে প্ল্যাটফর্মগুলোর টুল বিভিন্নভাবে ব্যবহার করে অনেকেই উপার্জন করছে।
হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে আয় করা যায়। হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার হলো হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল। এখন এই ফিচারের মাধ্যমেই আয় করা সম্ভব। এই আপডেটে চ্যানেলের ক্রিয়েটর বিভিন্ন লিংক ও শিক্ষণীয় কনটেন্ট সাবস্ক্রাইবারদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারবে। এর ফলে হোয়াটসঅ্যাপের চ্যানেলের মাধ্যমে আয় করা সহজ হয়ে গেছে।
যদিও আর্থিক লেনদেন ও বিজ্ঞাপন দেখানো সরাসরি সমর্থন করে না হোয়াটসঅ্যাপ। তবে অন্যান্য উপায়েও হোয়াটসঅ্যাপে আয় করা যাবে।
বিশ্বজুড়ে হোয়াটসঅ্যাপের চার হাজার ৮৭০ লাখ ব্যবহারকারী রয়েছেন। এত বিপুলসংখ্যক ব্যবহারকারী হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আয়ের সেরা কিছু উপায় খুঁজে বের করতে শুরু করেছে।
হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা সহজ নয়, প্রক্রিয়াটি দীর্ঘ ও সময়সাপেক্ষ হতে পারে। তাই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলের মাধ্যমে কীভাবে উপার্জন করবেন তা স্টার্টআপ কর্তৃপক্ষের এক প্রতিবেদন থেকে তুলে ধরা হলো–
সহজ ভাষায়, অ্যাফিলিয়েটেড মার্কেটিং হলো একটি বিজ্ঞাপনের মডেল, যেখানে কোম্পানি পণ্য বা পরিষেবা প্রচারের জন্য তৃতীয় পক্ষকে ব্যবহার করে। কোম্পানিগুলো ব্যবসায়িক প্রচারের জন্য এই তৃতীয় পক্ষকে দেয় অর্থ বা কমিশন।
প্রথমে অ্যাফিলিয়েটেড বা তৃতীয় পক্ষ কোম্পানির ওয়েবসাইটের লিংক ও ওয়েবসাইট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করে। গ্রাহকরা সেই লিংকে প্রবেশ করলে বা কোনো পণ্য কিনলে কোম্পানি তা ট্র্যাক করতে পারে। সে অনুযায়ী কোম্পানি অ্যাফিলিয়েটেডের অর্থ দেয়।
অ্যাফিলিয়েটেড মার্কেট তৈরি করতে প্রথমেই যে পণ্য নিয়ে কাজ করবেন, তা নির্ধারণ করতে হবে। এর পর ব্র্যান্ডগুলোর অ্যাফিলিয়েশন প্রোগ্রাম সম্পর্কে জানতে হবে। প্রোগ্রামটিতে সাইনআপ করা হলে ব্যবহারকারীরা কোম্পানি বা পণ্যের লিংক হোয়াটসঅ্যাপে শেয়ার করতে পারবেন।
আর প্রতিবার এই লিংক ব্যবহার করে কেউ কিছু কিনলে এর কমিশন অ্যাফিলিয়েটেডদের দেওয়া হবে।
ব্যাপক জনপ্রিয়তার কারণে হোয়াটসঅ্যাপে অনেক ব্যবহারকারী এসব ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। অ্যাফিলিয়েটেড মার্কেট থেকে আয়ের ক্ষেত্রে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। এই আয়ের পরিমাণ সীমিত নয়। আয় হাজার টাকা থেকে লাখে পরিণত হতে পারে। সাধারণত প্রতি মাসে প্রায় ৪০ হাজার টাকা এর মাধ্যমে আয় করা সম্ভব।
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলের মাধ্যমে উদ্যোক্তরা তাদের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রচার করতে পারবে। এমনকি অন্যান্য অ্যাপে নেওয়া উদ্যোগ, কাজও হোয়াটসঅ্যাপে শেয়ার করা যাবে। যদিও ইউটিউব ভিডিওতে প্রচার করা যাবে না।
হোয়াটসঅ্যাপের চ্যানেলের মাধ্যমে বিশালসংখ্যক ব্যবহারকারীর কাছে ভিডিও বা লিংক শেয়ার করা যাবে। অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের বিক্রি ও এনগেজমেন্ট বাড়াতেও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল সাহায্য করবে।
অ্যাপ রেফার করে আয়
আধুনিক যুগে প্রচারেই প্রসার। নতুন লঞ্চ হওয়া অ্যাপগুলো পণ্য প্রচারের জন্য বিশ্বাসযোগ্য ও জনপ্রিয় মাধ্যম খোঁজে। যেসব ক্রিয়েটর বা চ্যানেলের অনেক ফলোয়ার আছেন, তারা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্র্যান্ডের প্রচার করতে পারেন।
এ ধরনের প্রোমোট বা প্রচারের ফলে ব্র্যান্ডগুলো চ্যানেল বা ক্রিয়েটরদের কমিশন দেয়। চ্যানেলের ফলোয়ারের সংখ্যার ওপর এই কমিশন নির্ভর করে। যদি ফলোয়ার সংখ্যা বেশি হয় কমিশনও বেশি হবে।
বিজ্ঞাপন বিক্রি করে আয়
বিজ্ঞাপন ও স্পনসরশিপ হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলের পোস্টের মাধ্যমে আয় করা যায়। এই আয় নির্ভর করে বিজ্ঞাপন বা স্পনসরশিপের দৈর্ঘ্য এবং চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারদের ওপর।
অনলাইন ওয়ার্কশপ ও ক্লাশ
চ্যানেলের ক্রিয়েটররা যে কোনো শিক্ষণীয় বিষয়ে অনলাইন ওয়ার্কশপ ও ক্লাশ বা প্রশিক্ষণ হোস্ট করতে পারে। চ্যানেলগুলো এর বিনিয়মে ফি চাইতে পারে।
এ ধরনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আয় সম্ভব হবে, যদি চ্যানেলের ক্রিয়েটররা ভালো বক্তা বা যোগ্যতাসম্পন্ন হন। পরিকল্পনা সফল করার জন্য চ্যানেলগুলোতে অনেক ফলোয়ার থাকাও দরকার।
অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস, ডেস্কটপে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল খুলবেন যেভাবে
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলের মাধ্যমে আর্ট ও ক্র্যাফট বিক্রি
আর্টিস্টদের জন্য এসব চ্যানেল অনেক উপকারী। চ্যানেলের মাধ্যমে তারা তাদের গুণ ও দক্ষতা প্রকাশ করতে পারবেন। সরাসরি তাদের পণ্য ফলোয়ারদের কাছে বিক্রি করতে পারবেন।
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলের মাধ্যমে স্টোর তৈরি করা যায়। স্টোরগুলোতে শিল্পীরা তাদের আর্ট বিক্রির জন্য প্রদর্শন করতে পারেন।
ডিজিটাল পণ্য বিক্রি
ইবুক, গাইড, টেম্পলেট ও অনলাইন কোর্সের মতো বিভিন্ন ডিজিটাল পণ্য চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবে।